পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ৬০ টাকা বেতনের উমেদার জসিম দুর্নীতির টাকায় করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ
আপডেট সময় :
২০২৫-০৩-১৫ ০০:৪৬:২৯
পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ৬০ টাকা বেতনের উমেদার জসিম দুর্নীতির টাকায় করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ
শেখ ফয়সাল আহমেদ
রাজধানীর তেজগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের পল্লবী জোন নিয়ন্ত্রণ করে উমেদার জসিম, তার ব্যাপক ক্ষমতা, বিগত সময়ে অধিকাংশ সাব-রেজিস্ট্রার জসিম নিয়ন্ত্রণ করতেন, দুর্নীতির মাধ্যমে করেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি অথচ তার বেতন মাত্র ৬০ টাকা, করেছেন নামে বেনামে বহু সম্পত্তি।
৫ ই আগস্টের আগ পর্যন্ত নিজেকে সবসময় পরিচয় দিতেন টুঙ্গিপাড়ার লোক বলে।
উমেদার জসিম খুবই দরিদ্র ছিলেন করতেন গার্মেন্টসে চাকরি তার এক দুসম্পর্কের ভাই ছিলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ঝাড়ুদার তার হাত ধরে চাকরি নেন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্যের টাকায় করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ এবং ব্যাপক প্রভাবশালী, সম্প্রতি দেশ দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি পত্রিকায় ৩০ লাখ টাকা ঘুষের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় পল্লবীর সাব রেজিস্টার প্রদীপ, উমেদার জসিম সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে এরপরই বদলি হয়ে যান সাব রেজিস্টার প্রদীপ কিন্তু জসিম দাঁড়িয়ে আছে তার আগের জায়গায় স্ব মহিমায় নিজস্ব ক্ষমতা নিয়ে।
বিগত আওয়ামী লীগ সময়ে সাংবাদিকরা তার কাছে তথ্য চাইতে গেলে নিজেকে পরিচয় দিতেন টুঙ্গীপাড়ার বাসিন্দা বলে এবং আওয়ামী লীগের প্রভাব দেখাতেন ২০২৪ সালে এক সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহের জন্য তার কাছে গেলে তাকে তিনি হুমকি দেন বলেন আমার বাড়ি টুঙ্গিপাড়া আপনি কিছুই করতে পারবেন না পরবর্তীতে সেই সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি সাধারন ডাইরি করেন নিজের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে।
মিরপুর শাহ আলী বাগ এলাকায় বসবাস করেন এই জসিম শাহ আলী বাগ ৩৭/এ এই বাড়িতে ক্রয় করেছেন তিনটি ফ্লাট যার আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা, নিজের সন্তানকে পড়ান একটি ভালো স্কুলে, বাসায় রয়েছে নামিদামি আসবাবপত্র যা একজন ৬০ টাকা বেতনের উমেদারের বাসায় থাকার কথা না এবং সাংবাদিকের কাছে তিনি নিজ মুখে স্বীকার করেছেন বলেন, এগুলো আমি ব্যবসা দিয়ে করেছি, মিরপুর গার্ডেন ে নিজের শাশুড়ির নামে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন, বড় ভাই গিয়াস উদ্দিনের নামে কিনেছেন একটি নোয়া গাড়ি, বড় ভাইয়ের ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বড় ভাই ৮ থেকে ৯ বছর সৌদি আরব ছিল অথচ আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায় তিনি একেবারেই মিথ্যা কথা বলেছেন তার বড় ভাই সৌদি আরবে এক থেকে দেড় বছর থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন, তিনি তেমন কোন টাকা পয়সা বাংলাদেশ উপার্জন করে নিয়ে আসতে পারেননি এবং যার কোন তথ্য প্রমাণ নেই, তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জে করেছেন নামে বেনামে অনেক সম্পত্তি। অথচ জসিম চলাফেরা করে একেবারে সাদামাটা ভাবে তাকে দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না সে এত সম্পদের মালিক।
মিরপুর শাহ আলীবাগে অনুসন্ধানে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন এরা প্রতি রোজার ঈদে পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকার বিভিন্ন উপহার সামগ্রী মানুষের মাঝে বিলি করেন, প্রতি কোরবানির ঈদে চার থেকে পাঁচটি গরু কোরবানি দেন, তবে দু এক বছর ধরে রোজার ঈদে তারা প্রকাশ্য আর মানুষকে টাকা পয়সা দেন না, এলাকাবাসী বলেন তিনি খুব দানবীর, এবং সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার তিতুর খুব কাছের লোক হয় এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে ভয় কখনো কেউ মুখ খুলতো না, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রায় ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ আমাদের কাছে বলেন আমি এদেরকে ছোটকাল থেকে দেখেছি এই শাহালিবাগে এরা একেবারেই দরিদ্র ছিল অথচ ভূমি অফিসে চাকরি পেয়ে বলা হয় আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে গিয়েছে, জসিমের বাসায় গিয়ে দারোয়ানের কাছে জানতে চাইলে জসিম সাহেব বাসায় আছে কিনা দারোয়ান তার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি না অনুসন্ধানে জানা যায় এই দারোয়ানকে প্রতি মাসে আলাদা ভাবে জসিম টাকা দেয় যেন তার বিষয় কেউ কোনো তথ্য জানতে চাইলে কাউকে না বলে।
জসিমের কাছে কোন সাংবাদিক গেলেই তাকে তিনি বলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রিন্ট মিডিয়া অনলাইন সহ শীর্ষ গণমাধ্যম ব্যক্তিরা তাকে চিনে এবং তার সম্পর্কে জানে তাদের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক আর জসিম বলেন আপনারা নিউজ করে যদি কিছু করতে পারেন তাহলে করেন কোন সমস্যা নেই।
এই উমেদার জসিমের বিরুদ্ধে পাবলিস্ট হওয়া অধিকাংশ নিউজগুলো পরবর্তীতে নামিয়ে ফেলে টাকার বিনিময়ে কোন তথ্য প্রমাণ রাখেন না, ২০২৪ সালে একুশে আগস্ট একটি জাতীয় পত্রিকায় তার নামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয় যেখানে তারা অবৈধ সম্পদের মধ্যে উল্লেখ আছে একটি দামি হাইয়েস গাড়ি, সাভারে মসূরী খোলা এলাকায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশের একটি জমির প্লট , ময়মনসিংহ ভালুকায়ে রয়েছে গরুর খামার, সৌদি আরবের রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা।
মোটকথা পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সবকিছু এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে উমেদার জসিম, পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সব রেজিস্টারদের এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এই উমেদার জসিম এবং সকল অর্থের লেনদেন তার হাত ধরেই হয়।
এই বিষয়ে উমেদার জসিমের কাছে জানতে চাইলে বলেন আপনাকে নিয়ে ১০২ জন সাংবাদিক আমার কাছে এসেছে আপনি যা লেখার আপনি লেখেন আপনি নিউজ করতে চাইলে করেন, কোন সমস্যা নেই, বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর বহু সাংবাদিকদের সাথে আমার সম্পর্ক রয়েছে, সবাই আমাকে চেনে।
৬০ টাকা বেতনের একজন উমেদারের এত ক্ষমতা এত অর্থ এই রহস্য উন্মোচনের জন্য আগামীতে আসছে আমাদের অনুসন্ধানের দ্বিতীয় পর্ব....
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স